,

ডায়গনস্টিক সেন্টারে রোগী সংগ্রহ করে না দেয়ায় ২ রিক্সা চালককে মারধোর

স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জ জেলা সদরে চিকিৎসাসেবার নামে অধিকাংশ ডায়গনস্টিক সেন্টারের রমরমা দালালি ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহর থেকে গ্রাম সব পর্যায়েই দালাল কেন্দ্রিক এসব কথিত হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের ছড়াছড়ি। তাদের প্রতিষ্ঠানে ভালোমানের ডাক্তার না থাকায় প্রায়ই রোগীশূণ্য থাকে। ফলে তারা বিভিন্ন অনিয়মের অংশ হিসেবে অনেক রিক্সা চালককে রোগী সংগ্রহ করে দেয়ার জন্য বাধ্য করছেন। কিন্তু কোনো রিক্সা চালক তাদের কথায় রাজি না হলেই ঘটছে বিপত্তি। তাদের দেখানো হয় ভয়ভীতি। অনেক সময় প্রহারও করা হয়। গতকাল শুক্রবার শহরের স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার ন্যাশনাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের এক চিকিৎসকের নিয়োজিত রাহুল নামের এক ব্যক্তির কথামতো রোগী সরবরাহ না করায় ২ রিক্সা চালককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত রিকশা চালকরা জানান, রাহুল শুধু তাদের মারধোরও করেননি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইলও ভাংচুর করেছেন। সেই সাথে তার কথা না শুনলে শহরে রিকশা চালাতে দিবে না বলে ভয়ভীতিও দেখায় তাদের।
মারধোরের শিকার পইল গ্রামের বাসিন্দা মৃত লাল মোহাম্মদের পুত্র আহত রিকশা চালক ফজল মিয়া (৫৬) জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে ওই ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডা. হিমাদ্রী শেখর দেবনাথ সানীর নিয়োজিত রাহুল নামের এক ব্যক্তি তাদেরকে রোগী সরবরাহ করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলো। তার কথা মতো রোগী সংগ্রহ করে না দেয়ায় গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মারধোর করেন রাহুল। এ সময় শায়েস্তাগঞ্জের বাসিন্দা আহাদ মিয়া (৪৫) কেও মারপিট করা হয়। আহত অবস্থায় তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারা এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।
অভিযোগ রয়েছে, নাম সর্বস্ব এসব ডায়গনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষাসহ সেবার নামে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া টাকার বিনিময়ে এক্সরেসহ ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে থাকে এসব প্রতিষ্ঠান। এসব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো সিংহভাগই দালাল নির্ভরশীল। দালালরা গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল রোগীদেরকে নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যেতে তারা উৎপতে বসে থাকে। পরে তাদের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে আদায় করা হয় অতিরিক্ত টাকা।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নানা অনিয়ম-বিশৃংখলায় চলছে হবিগঞ্জ শহরের অধিকাংশ কিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারি নিয়মনীতি উপো করে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে যেখানে-সেখানে। এভাবে গড়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অধিকাংশেরই নেই কোনো স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদনপত্র। শুধুমাত্র অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করে, আবার কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো কিছু না করেই বহাল তবিয়তে দীর্ঘদিন ধরে মতার প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনুমোদনহীন এসব কিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে চিকিৎসার নামে ব্যবসা, প্রতারণা, রোগী ভোগান্তির অভিযোগ উঠছে হরহামেশাই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।


     এই বিভাগের আরো খবর